May 3, 2019

ফণী ঢুকেছে বাংলাদেশে

০৪/০৫/১৯/১১;৩০
bdnews24
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে শুক্রবার সারা দিন ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেককে। ছবিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন

ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানার পর পশ্চিমবঙ্গ পেরিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জানিয়েছে আহাওয়া অধিদপ্তর।



শনিবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চলে অবস্থান করছিল বলে অধিদপ্তরের এক বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়। তবে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে এখন ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।
এখন ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারের মতো, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
শুক্রবার ওড়িষা উপকূলে আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এরপর বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে এটি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে ঢোকার পর ফণী আরও উত্তরে অগ্রসর হচ্ছে। এর প্রভাবে ওই এলাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে এবং বইছে ঝড়ো হাওয়া।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ ঝড়টি দুর্বল হওয়ার দিকটি দেখিয়ে সকাল ১০টায় সাংবাদিকদের বলেন, আশঙ্কা অনেকটাই কেটে গেছে।
তিনি বলেন, ঝড়টি মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ওই সব জায়গায় বজ্রবৃষ্টি, ভারি বর্ষণ হবে।
রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহের পাশাপাশি সিলেট অঞ্চলেও বৃষ্টিপাতের আভাস দেন শামসুদ্দিন।
ফণীর প্রভাবে উপকূলে জোয়ারের পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়া বইছে। শনিবার ভোররাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, নিহত হয়েছে একটি শিশু।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবাধীন এলাকার ১২ লাখ মানুষকে ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঝড় মোকাবেলার যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে সরকার।
যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা এবং ঝড়ে কেটে যাওয়ার পর নিজ নিজ আবাসে নিরাপদে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিতে জোর দিচ্ছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক। 
 
# সংকেত
>>ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
>> চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
>> কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের মতই ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
# সতর্কতা
>> আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
>> ফণীর প্রভাবে ভারতের অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে, সেই সঙ্গে ঘূর্ণিবাতাসের তাণ্ডব। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব পড়েছে সকালের দিকেই। রাজধানী ঢাকাসহ কোথাও কোথাও বৃষ্টিও হয়েছে।
>> আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর,খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।
>> বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতীয় অঞ্চলে আগামী ৭২ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর প্রভাবে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, যাদুকাটা, তিস্তা নদীর পানির পৃষ্ঠ আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। কোথাও কোথাও বিপদসীমা অতিক্রম করে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
>> সাগর উত্তাল থাকায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
# ফণী:
>> ভারত মহাসাগরে সুমাত্রার পশ্চিমে বিষুবরেখার কাছাকাছি এলাকায় লঘুচাপ গত ২৬ এপ্রিল নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর তা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে হতে দুই দিনের মাথায় পরিণত হয় মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ে।
>> এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা থেকে ক্রম অনুসারে ওই ঝড়ের নাম ঠিক হয় ফণী। এর অর্থ সাপ, নামটি প্রস্তাব করেছিল বাংলাদেশ।
>> অস্থির গতিপথ ধরে অত্যন্ত ধীর গতিতে এগোতে থাকা এ ঘূর্ণিঝড় দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। ২৯ এপ্রিল ফণী পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। এরপরদিনই ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা একে চিহ্নিত করেন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে।  
>> ১৯৯৯ সালের ওড়িশার পারাদ্বীপে সুপার সাইক্লোনের পর ঘূর্ণিঝড় ফণীই বাতাসের শক্তির দিক দিয়ে সবচেয়ে বিপদজনক ঝড় ছিল। তিন দশক আগে ওড়িশায় ওই সাইক্লোনে প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষের।

নোয়াখালীতে ফনির প্রভাবে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ১

০৪/০৫/১৯/০৬;৪২
নোয়াখালীতে ফনির প্রভাবে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ১। ছবি: সংগৃহীত
নোয়াখালীর সদর ও উপকূলীয় উপজেলা সূর্বণচরে ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
শনিবার ভোর রাতে সুবর্ণচরে ঝড়ে ঘরের মধ্যে চাপা পড়ে চর আমানউল্লাপুর ইউনিয়নে এক শিশু নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। বিষয়টি জানান স্থানীয় চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা। নিহত শিশুর নাম ইসমাইল হোসেন (২)। তার পিতার নাম আবদুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় এখনো ঝড়ো বাতাস বইছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যে দেশের দুই সমুদ্রবন্দর মোংলা ও পায়রা বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে বজ্রপাতে কিশোরগঞ্জ জেলার তিন উপজেলায় এক শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ১ জন ও নেত্রকোনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতের ওড়িশ্যার পর পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ফনি। ওড়িশ্যায় প্রবল বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতে এ পর্যন্ত ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ফনির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে ওড়িশ্যা।
ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ফনির কারণে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।

৬ বন্দিকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

০৩/০৫/১৯/২২;১১
bdnews24

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী একটি গ্রামের স্কুলে আটক অন্তত ৬ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।

সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র নিশ্চিত করে বলেছেন, সেনারা নিরস্ত্র বন্দিদের ওপর গুলি চালিয়েছে। কারণ, তারা সেনাদের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। আটকদেরকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ গোষ্ঠীটি জাতিগত রাখাইন বৌদ্ধ গোষ্ঠী।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বহু জাতিগোষ্ঠীর দেশ মিয়ানমারে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
মিয়ানমারে অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও সেনাবাহিনীর প্রায়ই সংঘর্ষ হয়ে থাকে।
মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনে সাংবাদিকসহ বেশিরভাগ ত্রাণসংস্থা নিষিদ্ধ হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে যা ঘটেছে তা যাচাই করা কঠিন বলে ইয়াঙ্গন থেকে জানিয়েছেন বিবিসি’র এক সংবাদদাতা।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন এর ভাষ্য অনুযায়ী, “রথেডুয়াং শহরের কায়াউক তান গ্রামের একটি স্কুলে সাময়িকভাবে ২৭৫ জনকে আটক রাখা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে বন্দিরা ‘নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ’ করার চেষ্টা চালালে তাদের ওপর সেনারা গুলি চালায়। এছাড়া সেনাদের আর অন্য কোনো উপায় ছিল না।
প্রথমে সতর্ক করতে গুলি ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু এ ঘটনায় “ছয় জন নিহত হয়। আহত হয় আটজন এবং ৪ জন পালিয়ে যায়।”

নতুন মুভি দেখতে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ৬

০৩/০৫/১৯/১৯;৪৭
bdnews24

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে বৃষ্টিপাতের সময় মিঠামইন উপজেলায় দুইজন আর পাকুন্দিয়ায় তিনজন ও ইটনায় একজন এই বজ্রপাতে তারা মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহতরা হলেন মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের কুড়ারকান্দি গ্রামের এবাদ মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৭), বৈরাটি ইউনিয়নের বিরামচর গ্রামের মো. গোলাপ মিয়ার ছেলে মহিউদ্দিন (২২), পাকুন্দিয়া উপজেলার কোষাকান্দা গ্রামের আয়েছ আলীর ছেলে আসাদ মিয়া (৪৫), চর আলগি গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে মুজিবুর রহমান (৩৫), আলতাব উদ্দিনের মেয়ে নুরুন্নাহার (৩২) ও ইটনা উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের কাঠুইর গ্রামের রাকেশ দাসের ছেলে রুবেল দাস (২৬)।
মিঠামইন থানার ওসি মো. জাকির রাব্বানী বলেন, কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের কুড়ারকান্দি গ্রামের হাওরে বৃষ্টিপাতের মধ্যে গরু আনতে গিয়ে সুমন মিয়া বজ্রপাতের শিকার হয়। এছাড়া একই সময় উপজেলার বৈরাটি ইউনিয়নের বিরামচর গ্রামের হাওরের জমিতে বোরো ধান কাটার সময় বজ্রপাত হলে মহিউদ্দিন মারা যান।
আসাদ মিয়া মারা যান নিজের বাড়ির সামনে জমিতে গরুর জন্য ঘাস কাটার সময়।
পাকুন্দিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসাদ ঘাস কাটার সময় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাত হলে আসাদ নিহত হন।  মুজিবুর রহমান বাড়ির সামনে জমিতে কাজ করছিলেন। নুরুন্নাহার চাল ছাঁটাই করে ফেরার পথে গাছতলায় দাঁড়ালে বজ্রপাত হয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
ইটনা থানার ওসি মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান জানান, বেল সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের কাঠুইর গ্রামের হাওরে রুবেল ধান কাটা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আচমকা বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে রুবেল আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘূর্ণিঝড় ফণী: বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত

০৩/০৫/১৯/১৬;০৫
bdnews24

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে শক্তিশালী জোয়ারে উপকূলীয়  দুই জেলার অন্তত ২৮টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার সকাল থেকে দমকা হাওয়ার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে কোথাও কোথাও।
ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে পৌঁছানোর আগেই উপকূলীয় ১৯ জেলার ২১ থেকে ২৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
প্রতিটি জেলায় মাইকিং করে ঝুকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
পটুয়াখালী
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের চাপে পটুয়াখালীতে বেশ কিছু পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে তিনটি উপজেলার অন্তত ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, ফসলি জমি।
মির্জাগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, “বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে আছি। প্রায় আড়াইহাজার মানুষ বাস করে এই এলাকায়।”
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৪৭/১ নম্বর পোল্ডারে বাঁধ আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। নদীর পানি বেড়ে পাওয়ায় ওই পয়েন্ট দিয়ে গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।
“কলাপাড়ার নিজামপুর পয়েন্ট দিয়েও পানি ঢুকছে গ্রামে। আমরা এলাকায় আছি। মানুষ যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই চেষ্টা করছি।”
মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর দেউলী সুবিধখালী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, সকাল থেকে জোয়ারের চাপে নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে।
এক পর্যায়ে মেহেন্দিয়াবাদ, চরখালী, গোলখালী রানীপুরসহ পাচঁটি গ্রাম প্লাবিত হয়। ঘরবাড়িতে পানি ঢোকার পাশাপাশি মুগডালের ক্ষেত তলিয়ে যায়।
জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া পয়েন্টে বেড়িবাঁধের দেড় কিলোমিটার ফাঁকা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে লালুয়ার চারিপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মাঝের হাওলা, ছোট ৫ নং, বড় ৫নং, নয়াকাটা, সেনের হাওলাসহ অন্তত ১০টি গ্রাম এবং মহিপুরের নিজামপুর পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে মহিপুরের নিজামপুর কমরপুর, সুধিরপুরসহ ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ উপচে ফুলতলা, মাটিভাঙ্গাঁ, ভাজনাসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বাগেরহাট
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে জোয়ারের পানির চাপে বেড়িবাঁধ উপচে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর পানি ঢুকে বগী, সাতঘর ও দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের অন্তত একশ বাড়িঘরে তালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সাউথখালি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, বলেশ্বর নদীর বগী এলাকায় বেড়িবাঁধের একটি অংশ উপচে গ্রামের বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশুর, মোংলা, বলেশ্বর, ভৈরব ও পানগুছি নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পানি আরও বাড়তে পারে। জোয়ারের পানির চাপে শরণখোলায় বাঁধের নিচু অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।”
ফণীর প্রভাবে বাগেরহাটের কিছু এলাকায় সকালে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা ও রামপাল উপজেলার নদীতীরের বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
সাতক্ষীরা
ফনির আঘাতের আগেই সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ও আশাশুনিতে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া। সেই সঙ্গে নদীতে দেখা দিয়েছে উত্তাল ঢেউ।
শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মণ্ডল বলেন, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর ঢেউয়ে দূর্গাবাটিতে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে, গ্রামে ঢুকছে পানি। 
আবহাওয়া অধিদপ্তরের জেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, “ফনির প্রভাব ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।”
ঝালকাঠি
উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠিতে ফণীর প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে সকাল থেকে, সেই সঙ্গে চলছে দমকা বাতাস।
জেলার সুগন্ধা, বিশখালী আর হলতা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বেড়ি বাঁধ উপচে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় ফণী: উপকূলের ৪ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

03/05/19/14:29
bdnews24

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের ৪ লাখ ৪ হাজার ২৫০ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল।

দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সন্ধ্যার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর ২১ থেকে ২৫ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তারা।
দেশের ১৯ জেলার ১৪৭টি উপজেলার ১৩ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত; সেখানে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের বসবাস।
এই ১৯ জেলায় ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে, যার বেশিরভাগই প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ত্রাণ সচিব বলেন, নেভি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, স্বেচ্ছাসেবকসহ রাজনৈতিককর্মীরা উপকূলের মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার গতির ঝেড়ো হাওয়া সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ওড়িশা উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড় ফণী।
বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে মোটামুটি এর অর্ধেক শক্তি নিয়ে এ ঝড় শুক্রবার মধ্যরাতের দিকে খুলনাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে পারে। এরপর তা রাজশাহী, রংপুর এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহের ওপর দিয়ে দেশের উত্তরাংশ পেরিয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এখনও ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিশালী রয়েছে। তাই সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হবে। সরকারের নির্দেশনা না পেলে কেউ যেন আশ্রয়কেন্দ্রে ত্যাগ না করেন।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, “মানুষের কোনো ক্ষতি হতে দেব না এজন্য ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয় কেন্দ্র পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবার স্বতস্ফূর্তভাবে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে।”
৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে অন্যরা এ কাজে অংশ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সন্ধ্যার আগে সমস্ত লোককে আশ্রয়েকেন্দ্রে আনা হবে, একটি লোককেও রেখে আসা হবে না।”
এনামুর বলেন, মানুষের পাশাপাশি যতটুকু সম্ভব গবাদিপশুকেও সরিয়ে আনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল, তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

May 2, 2019

ওড়িশায় ছোবল হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী

০৩/০৫/১৯/১০;৩১
ঢাকায় হয়েছে ছোটখাটো আকারে বৃষ্টি।


ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হেনেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী।


ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে এই ঘূর্ণিঝড় তীর্থ নগরী পুরীর ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে গোপালপুর আর চাঁদবালির মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে।
ওই সময় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
 

ঘূর্ণিঝড় ফণীর সর্বশেষ

০৩/০৫/১৯/০৯;০৪
bdnews24

ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে ভারতের ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিন এবং আমাদের সংবাদকর্মীদের পাঠানো তথ্য থেকে এক নজরের জেনে নিন ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ খবর।
# অবস্থান: ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাত ১১টায় ফণী ওড়িশার পুরী থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, অন্ধ্রের বিশাখাপত্তম থেকে ১৭০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আর বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদ্প্তরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড় ফণী চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৯০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৮৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
# শক্তি: ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
# আঘাত হানার সম্ভাব্য সময়: শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে গোপালপুর আর চাঁদবালির মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে ফণী। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের এই ঘূর্ণিঝড় পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসার প্রক্রিয়া চলবে কয়েক ঘণ্টা। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে এবং ঘূর্ণি বাতাসের তাণ্ডব চালাতে চালাতে ফণী অগ্রসর হতে পারে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে।
# কখন কীভাবে বাংলাদেশে: স্থলভাগে এসে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকবে এ ঘূর্ণিঝড়। পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের সময় বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। 
এই পথ ঠিক থাকলে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বাতাসের শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়াবিদদের ধারণা।
তবে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশের স্থলভাগ পার হওয়ার সময় ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
# সংকেত: ঘূর্ণিঝড় ফণী এগিয়ে আসায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
আর কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের মতই ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বুধবার দুপুরে দেশের সবগুলো বন্দরেই ৪ নম্বর সংকেত জারি করা হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন,বাংলাদেশে মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার সময় এখনও হয়নি। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের মতিগতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সতর্কতা:
>> ফণীর প্রভাবে ভারতের অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলে বৃষ্টি হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকেই উপকূল অতিক্রম করার সময় দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলতে পারে অতি ভারি বর্ষণ।
>> ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে দেখা দিতে পারে শুক্রবার সকাল থেকেই। জোরালো বাতাসের সঙ্গে থাকতে পারে বৃষ্টি।  
>> দুই দিন পর অমাবস্যা থাকায় ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার সময় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
>> বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে। উচ্চগতির বাতাস ও দমকা ঝড়ো হাওয়ার সময় সবাইকে নিরাপদে থাকতে হবে।
>> ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের স্থলভাগ পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
>> অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসেরও শঙ্কা থাকে।
>> সাগর উত্তাল থাকায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
# বাংলাদেশে প্রস্তুতি
>> দেশের ১৯ জেলার ১৪৭টি উপজেলার ১৩ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত; সেখানে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের বসবাস।
>> এসব জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির (সিপিপি) ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকে তারা ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেবেন। সন্ধ্যার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কার্যক্রম শেষ করা হবে।  
>> উপকূলীয় ১৯ জেলায় তিন হাজার ৮৬৮টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। বেশিরভাগ আশ্রয় কেন্দ্রই প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
>> ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সাগর তীরের এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। মজুদ করা হয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি।
>> ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিতে থাকা এলাকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য ছুটি বাতিল করে তাদেরকে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
>> সম্ভাব্য জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম; খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
 # প্রভাব:
>> বিপদ সংকেত আসার পর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত বড় জাহাজগুলোতে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
>> বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২১টি জাহাজ বন্দর এলাকায় ছিল। সেগুলোকে বহির্নোঙ্গরে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলার পাশাপাশি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সবসময় ইঞ্জিন চালু রাখতে বলা হয়েছে।
>> বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ।
# ফণী: 
>> ভারত মহাসাগরে সুমাত্রার পশ্চিমে বিষুবরেখার কাছাকাছি এলাকায় লঘুচাপ গত ২৬ এপ্রিল নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর তা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে হতে দুই দিনের মাথায় পরিণত হয় মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ে।
>> এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা থেকে ক্রম অনুসারে ওই ঝড়ের নাম ঠিক হয় ফণী। এর অর্থ সাপ, নামটি প্রস্তাব করেছিল বাংলাদেশ।
>> অস্থির গতিপথ ধরে অত্যন্ত ধীর গতিতে এগোতে থাকা এ ঘূর্ণিঝড় দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। ২৯ এপ্রিল ফণী পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। এরপরদিনই ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা একে চিহ্নিত করেন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে।

ইউরোপা লিগের ফাইনালে এক পা আর্সেনালের

০৩/০৫/১৯/০৭;৪৪
bdnews24

সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে ভালেন্সিয়াকে নিজেদের মাঠে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ইউরোপা লিগের ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে আর্সেনাল। একই রাতে অন্য ম্যাচে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে ড্র করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আরেক দল চেলসি।

বৃহস্পতিবার এমিরেটস স্টেডিয়ামে ভালেন্সিয়াকে ৩-১ গোলে হারায় আর্সেনাল। ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে ১-১ ড্র করে চেলসি। আগামী ৯ মে ফিরতি লেগে ফের মুখোমুখি হবে চার দল।
প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের একাদশ মিনিটে এগিয়ে যায় ভালেন্সিয়া। কর্নারের পর সতীর্থের হেড করে বাড়ানো বল হেডেই জালে জড়িয়ে দেন মুক্তার দিয়াখাবি।
পিছিয়ে পড়ার পর আলেকসঁদ লাকাজেতের জোড়া গোলে ম্যাচে চালকের আসনে বসে আর্সেনাল। অষ্টাদশ মিনিটে পিয়েরে-এমেরিক আউবামেয়াংয়ের আড়াআড়ি পাস থেকে পাওয়া বল জালে জড়িয়ে দেন লাকাজেত। এরপর ২৬তম মিনিটে গ্রানিত জাকার বাড়ানো বল হেডে লক্ষ্যভেদ করে আর্সেনালকে এগিয়ে নেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড।
৬৩তম মিনিটে আউবামেয়াংয়ের তৈরি করে দেওয়া সুযোগ ডি বক্সের ভেতর থেকে লাকাজেত কাজে লাগাতে পারেননি। ফলে ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারেনি আর্সেনাল; হ্যাটট্রিক পূরণ করা হয়নি ফরাসি ফরোয়ার্ডেরও।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে আউবামেয়াংয়ের লক্ষ্যভেদে আর্সেনালের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়।
এদিকে অপর সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ২৩তম মিনিটে লুকা জোভিচের হেডে এগিয়ে যায় আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট। প্রথমার্ধের শেষ দিকে পেদ্রো রদ্রিগেসের গোলে সমতায় ফেরে চেলসি।
প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে মূল্যবান একটি অ্যাওয়ে গোল নিয়ে ফেরায় স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ফিরতি লেগে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকল চেলসি।

দেড়শ বছরে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী যত ঝড়

০২/০৫/১৯/২৩;১২
bdnews24
ঘূর্ণিঝড়ে ঊপকূলে প্রাণহানির পাশাপাশি সহায়-সম্বল হারান লাখ লাখ মানুষ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে নানা সময়ে, বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন ঊপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা।



বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশের দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমেছে। এর মধ্যেও মাত্র এক যুগ আগেই প্রলয়ঙ্করী ‘সিডর’-এর ধ্বংসযজ্ঞ এখনও মানুষের চোখে ভেসে ওঠে। ২০০৭ সালের নভেম্বরের ওই ঝড় ও তার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারিয়েছিলেন সাড়ে তিন হাজার মানুষ।
এখন আরেক ঝড়ের মুখে পড়ছে বাংলাদেশ, ‘ফণী’ নামে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘর্ণিঝড়কে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় বলা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ঘণ্টায় ১৭০-১৮০ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে শুক্রবার সকালে ভারতের ওড়িষ্যা ঊপকূলে আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সারা রাত ধরে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে এ ঝড়। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার।
ঝড়ে প্রাণহানি এড়াতে শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ঊপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।
বাংলাদেশ যখন আরেকটি শক্তিশালী ঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই সময় গত দেড়শ বছরে বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ঝড়গুলোতে প্রাণহানির চিত্র তুলে ধরা হল-
১৯৭০ সালের ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যায় প্রলয়ঙ্করী ‘গ্রেট ভোলা সাইক্লোন’। এই ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২২ কিলোমিটার।এই ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রাম, বরগুনা, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী, ভোলার চর বোরহানুদ্দিনের উত্তর পাশ ও চর তজুমুদ্দিন এবং নোয়াখালীর মাইজদি ও হরিণঘাটার দক্ষিণপাশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঝড়ে প্রাণ হারায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ। চার লাখের মতো বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে ১৮৭৬ সালের ২৯ অক্টোবর বরিশালের বাকেরগঞ্জে মেঘনা নদীর মোহনার কাছ দিয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার। এই ঝড়ের প্রভাবে ১২ মিটারের বেশি জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় ঊপকূলীয় এলাকা। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও নোয়াখালীর উপকূলে তাণ্ডব চালিয়ে যাওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দুই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
তারও আগে ১৭৬৭ সালে এই বাকেরগঞ্জেই ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারান ৩০ হাজার মানুষ।
এরপর ১৮২২ সালের জুন মাসে ঘূর্ণিঝড়ে বরিশাল, হাতিয়া ও নোয়াখালীতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মারা যান।
১৮৩১ সালে বালেশ্বর-উড়িষ্যা উপকূল ঘেঁষে চলে যাওয়া তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে বরিশাল উপকূলের ২২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৫৮৪ সালে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী ঘূর্ণিঝড়ে পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলার উপকূলের দুই লাখ মানুষ প্রাণ হারান।
১৮৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম অঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়, যাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কুতুবদিয়া দ্বীপ। ঝড়ে প্রাণ হারান পৌনে দুই লাখ মানুষ।
১৯০৯ সালের ১৬ অক্টোবর খুলনা অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারান ৬৯৮ জন।
১৯১৩ সালের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় মৃত্যু হয় ৫০০ জনের। এর চার বছর পর খুলনায় আবারও এক ঘূর্ণিঝড়ে ৪৩২ জন মারা যান।
১৯৪৮ সালে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারান চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে ১২০০ অধিবাসী। ১৯৫৮ সালে বরিশাল ও নোয়াখালীতে ঝড়ে মৃত্যু হয় ৮৭০ জনের।
১৯৬০ সালে অক্টোবরে ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতির প্রবল ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বাকেরগঞ্জ, ফরিদপুর, পটুয়াখালী ও পূর্ব মেঘনা মোহনায়। ঝড়ের প্রভাবে ৪.৫-৬.১ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়। এতে মারা পড়েন ঊপকূলের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা।
পরের বছর ১৯৬১ সালের ৯ মে তীব্র ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার। প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মানুষ মারা যান এই ঝড়ে।
১৯৬২ সালে ২৬ অক্টোবর ফেনীতে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় হাজারখানেক মানুষের মৃত্যু হয়। ১৯৬৩ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও মহেশখালী উপকূলীয় অঞ্চল। এই ঝড়ে প্রাণ হারান ১১ হাজার ৫২০ জন।
১৯৬৫ সালে মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে বারিশাল ও বাকেরগঞ্জে প্রাণ হারান ১৯ হাজার ২৭৯ জন। সে বছর ডিসেম্বরে আরেক ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারে মৃত্যু হয় ৮৭৩ জনের। পরের বছর অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে সন্দ্বীপ, বাকেরগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কুমিল্লায়। এতে মারা যান ৮৫০ জন।
পরে ১৯৭১ সালের নভেম্বরে, ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে, ১৯৭৪ সালের অগাস্টে ও নভেম্বরে, ১৯৭৫ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে উপকূলীয় এলাকায়।
১৯৮৩ সালে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দুটি ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার উপকূলীয় এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, প্রাণ যায় অনেকের।
১৯৮৫ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয় সন্দ্বীপ, হাতিয়া ও উড়িরচর এলাকা; এই ঝড়ে প্রাণ হারান ঊপকূলের ১১ হাজার ৬৯ জন বাসিন্দা।
১৯৮৮ সালের নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর এবং বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায়। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার। এই ঘূর্ণিঝড়ে ৫ হাজার ৭০৮ জন প্রাণ হারান।
১৯৯৪ সালের মে মাসে এবং পরের বছর নভেম্বরে কক্সবাজারে, ১৯৯৭ সালের মে মাসে  চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ভোলা জেলায় ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
১৯৯১ সালের ৩০ এপ্রিল বয়ে যায় আরেক প্রলয়ঙ্করী ঝড়। ভারত মহাসাগরে উৎপত্তি ছিল সেই ঝড়ের, পরে তা ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়ে চট্টগ্রাম ও বরিশালের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। প্রায় দেড় লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটে ওই ঝড়ে।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে বিধ্বস্ত হয় দেশের দক্ষিণ উপকূল। উত্তর ভারত মহাসাগরে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে সৃষ্ট এ ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ থেকে ৩০৫ কিলোমিটার। এতে তিন হাজরের বেশি মানুষ মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩২টি জেলার ২০ লাখ মানুষ। উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ৬ লাখ টন ধান নষ্ট হয়ে যায়। সুন্দরবনের প্রাণীদের পাশাপাশি ব্যাপক গবাদিপশু প্রাণ হারায়।
২০০৯ সালের ২১ মে ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় আইলা, যার অবস্থান ছিল কলকাতা থেকে ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে।চার দিনের মাথায় ২৫ মে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ ও ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাংশে আঘাত হানে এই ঝড়। এই ঘূর্ণিঝড় ভারতের ১৪৯ জন ও বাংলাদেশের ১৯৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে উপকূলে প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস্তুভিটাহারা হয়।
২০০৮ সালের অক্টোবরে ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার বেগের বাতাস নিয়ে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রেশমিতেও প্রাণহানি ঘটে।
২০১৩ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’-এ প্রাণ হারান ১৭ জন। এরপর ২০১৬ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র আঘাতে মারা যান চট্টগ্রামের ২৬ জন অধিবাসী।