Apr 30, 2019

কর ১ টাকাও বাড়াব না, ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর

৩০/০৪/১৯/২২;৩৭
bdnews24

আগামী বাজেটে কর না বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল; সেক্ষেত্রে সরকারি ব্যয় সংস্থানে করের আওতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি।



মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বো্র্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়ে মুস্তফা কামাল বলেছেন, “আগামী বাজেটে কর আদায়ে কোথাও একটি টাকাও বাড়াব না, বরং পারলে আরও কমাব।”
অর্থমন্ত্রী হিসেবে এবারই প্রথম জাতীয় বাজেট দিতে যাচ্ছেন মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, “আমি একটি সহজ করে বাজেট দেব, যাতে দেশের সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে। এবারের বাজেটে আপনারা নতুন কিছু পাবেন।”
আসছে বাজেটের আকার সোয়া ৫ লাখ কোটি টাকার হবে বলে ইতোমধ্যে আভাস মিলেছে, টাকার অঙ্কে যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ বড়।
চলতি বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের জন্য এই খাত থেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
কর না বাড়ালে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে, তার উত্তরে করের আওতা বাড়ানোর কথা জানান তিনি।
“আমি সংসদে গিয়েও বলব, দেশে মুষ্টিমেয় কিছু লোকে আয়কর দেয়। এ সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।”
উন্নয়নের চাহিদা মেটাতে নাগরিকদের কর দেওয়ার আহ্বান জানান মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, “এই চাহিদা দেশের মানুষকেই জোগান দিতে হবে। তাই আপনারা সক্ষমতা অনুযায়ী কর দেবেন। বে-ইনসাফি করবেন না।
“আমি কারও কাছে জোর করে কর নেব না। আমরা কাউকেই হয়রানি করব না। কিন্তু অন্যায় করলে কেউ পার পাবে না।”
ব্যবসায়ীদের হয়রানি না করার আশ্বাসও দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি ‘ডাবল ট্যাক্সেশন’ বাতিলের প্রতিশ্রুতিও দেন। ভ্যাট ব্যবস্থায়ও সংস্কার আনা হবে বলে জানান তিনি।
সেইসঙ্গে ব্যবসায়ীদেরও অসাধু পথে না যাওয়ার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী।
এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় এই সভায় দেশের সব খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
তারা বাজেট নিয়ে তাদের নানা দাবি-দাওয়া অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মহিউদ্দিন বলেন, এনবিআরে বাজেট সমন্বয় নামে নামমাত্র একটি শাখা আছে, সেটা শুধু মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত কাজ করে।
বাজেট নীতি সমন্বয় নামে একটি পৃথক অনুবিভাগ চালুর সুপারিশ জানান তিনি, যাতে সারা বছর কাজ করা যায়।
নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন দুটি বিষয়কে ভিন্নভাবে দেখতে এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, “যিনি পলিসি নির্ধারণ করবেন, তিনি বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারবেন না।”
তিনি বলেন, “মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, কিন্তু সময়মতো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎখাতে ব্যাপক উন্নতির পরও কেন ঢাকার আশপাশে প্রতিদিন প্রায় ৪/৫ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে?”
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ব্যাংক ঋণ ছাড়া এদেশে কেউ ফ্ল্যাট মালিক হতে পারবে না। কিন্তু ১২/১৩ শতাংশ সুদ দিয়ে এটা সম্ভব নয়। তাই ব্যাংক সুদ এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে হবে।
তৈরি পোশাক খাতে দুরবস্থায় রয়েছে দাবি করে সরকারের কাছে নীতি সহায়তা চেয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বিপদে রয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রে ৭ দশমিক ০৭ ভাগ পোশাক রপ্তানি কমেছে।”
এনবিআর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বলেন, “বাজেটের খরচের টার্গেট পুরণ করতে চাইলে আদায়ের টার্গেটও পূরণ করতে হবে।
“তবে আমি কর ও কাস্টমস ভ্যাট নির্ধারণে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনে বিশ্বাসী নয়। কিছু সিদ্ধান্ত নিলে করযোগ্য মানুষ আপনা আপনিই করের আওতায় চলে আসবে। এতে বড় কোনো রিস্ক নিতে অনুরোধ করবেন না।”

No comments:

Post a Comment