বৈশাখী উৎসব সর্বজনীন উৎসব
• দেশীয় পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের ঝোঁক
• বেচাবিক্রিতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা
• বৈশাখী অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে
• দেশীয় পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের ঝোঁক
• বেচাবিক্রিতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা
• বৈশাখী অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে
বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বৈশাখ। এ উপলক্ষে শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে অলিগলির দোকান ও বিপণিবিতানে গত কিছুদিন ধরে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। লাল-সাদাসহ বাহারি রঙের বৈশাখী পোশাক দেদার বিক্রি হয়েছে। অনলাইনেও বেচাবিক্রি জমে ওঠে। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বড় ব্র্যান্ড ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারে মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের উপহার পাঠিয়ে তাদের গ্রাহকদের বৈশাখী শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলছেন, প্রতিবছরই বৈশাখী অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে। চার বছর ধরে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈশাখে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন। একইভাবে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও পাচ্ছেন ভাতা। বর্ষবরণে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক অনুষ্ঠানও বাড়ছে। এতে করে বৈশাখকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য রাজধানী থেকে পল্লি অঞ্চলে বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে।
পয়লা বৈশাখে কত টাকার বাণিজ্য হয়, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতিবিদের ধারণা, সারা দেশে নববর্ষকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। ঈদ বা পূজার সঙ্গে বর্ষবরণ উৎসবের তফাত হচ্ছে, এ সময় দেশীয় পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের ঝোঁক থাকে। তাই বৈশাখকেন্দ্রিক বেচাবিক্রিতে গ্রামীণ অর্থনীতি বেশ চাঙা হয়ে ওঠে।
বর্ষবরণের উৎসবে নতুন পোশাকের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি থাকে। গত তিন দিন রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, গাউছিয়া ও গুলিস্তানের বঙ্গবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৈশাখী পোশাক কিনতে বিপণিবিতানে ভিড় করছে মানুষ। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য নগরীর বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতে বৈশাখী পোশাক নিয়ে বসেন অনেক হকার। তবে ফুটপাতে হকার বসতে না দেওয়ার কারণে মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় গতবারের মতো এবার আর বৈশাখী পোশাকের পসরা একেবারেই দেখা যায়নি।
দেশের মানুষের পোশাকের জোগান দেওয়ার জন্য পুরান ঢাকা, কেরানীগঞ্জ, কালীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র-মাঝারি কারখানা গড়ে উঠেছে। এ ধরনের ছয় হাজার কারখানার সংগঠন অভ্যন্তরীণ পোশাক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি। তাদের হিসাব অনুযায়ী, পয়লা বৈশাখে সারা দেশে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার পোশাক বিক্রি হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন মালিক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, পোশাকের ব্যবসা উৎসবকেন্দ্রিক। ঈদ ও পূজার পর বড় উৎসব এখন বৈশাখ। ১০-১৫ বছর আগে বৈশাখী পোশাক টুকটাক বিক্রি শুরু হয়। এখন সেটি বহুগুণ বেড়ে গেছে। কেরানীগঞ্জ, কালীগঞ্জের মতো পাইকারি বাজার থেকে বৈশাখের পোশাক কিনে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার পোশাকের ব্যবসা ২০ শতাংশ বেড়েছে।
দেশের ফ্যাশন হাউস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতি (এফইএবি বা ফ্যাশন উদ্যোগ) ফ্যাশন হাউসগুলোর বিক্রিবাট্টা নিয়ে জরিপ করছে সমিতি। সেই জরিপের প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, ফ্যাশন হাউসগুলোতে সারা বছর প্রায় আট হাজার কোটি টাকার বেচাবিক্রি হয়। এর মধ্যে অর্ধেকই রোজার ঈদে। ২৫-২৮ শতাংশ পয়লা বৈশাখে।
No comments:
Post a Comment